মানুষ বর্তমানে বাস করছে তথ্যপ্রযুক্তি ও যোগাযোগব্যবস্থার সর্বোচ্চ উৎকর্ষের যুগে। তার পরও রয়েছে কিছু সীমাবদ্ধতা। যেমন: মুঠোফোনের ব্যাটারির চার্জ ফুরিয়ে গেলেই যোগাযোগ অব্যাহত রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তবে এই সীমাবদ্ধতা দূর করতে মার্কিন গবেষকেরা এবার নিয়ে এসেছেন অ্যামবিয়েন্ট ব্যাকস্ক্যাটার নামের নতুন এক যোগাযোগব্যবস্থা। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের তৈরি অ্যামবিয়েন্ট ব্যাকস্ক্যাটার প্রযুক্তির সাহায্যে কোনো ধরনের বৈদ্যুতিক সংযোগ বা তড়িৎকোষ (ব্যাটারি) প্রয়োজন হবে না। তবে এই প্রযুক্তি চলবে বেতার তরঙ্গ, ওয়াই-ফাই, মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক প্রভৃতি যোগাযোগব্যবস্থার সহায়তা নিয়ে। গবেষকদের আশা, নতুন উদ্ভাবিত এই যোগাযোগব্যবস্থা ‘বিভিন্ন বস্তুর মধ্যে ইন্টারনেটের’ (ইন্টারনেট অব থিংস) ধারণা বাস্তবায়নে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়া পরিধানযোগ্য কম্পিউটার, স্মার্ট বাড়ি ও স্বনির্ভর সেন্সর নেটওয়ার্ক তৈরিতেও ব্যবহার করা যাবে অ্যামবিয়েন্ট ব্যাকস্ক্যাটার প্রযুক্তি। নতুন যোগাযোগব্যবস্থায় ব্যবহূত যন্ত্র থেকে পাঠানো তরঙ্গ বাতাসের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় ভাসমান ওয়াই-ফাই, বেতার ও মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক প্রভৃতি তরঙ্গ থেকে প্রয়োজনীয় শক্তি সংগ্রহ করে। আর এভাবেই একটি যন্ত্রের অ্যান্টেনা থেকে পাঠানো তরঙ্গ অপর যন্ত্রের অ্যান্টেনায় পৌঁছে এবং বিদ্যুৎ-সংযোগ ছাড়াই চলতে থাকে যোগাযোগ।
এই উদ্ভাবনের নেতৃত্বে ছিলেন মার্কিন কম্পিউটার প্রকৌশলী শ্যাম গোল্লাকোটা। তিনি ও তাঁর সহযোগী গবেষকেরা দুটি বিশেষ যন্ত্র তৈরি করে অ্যামবিয়েন্ট ব্যাকস্ক্যাটার প্রযুক্তির পরীক্ষা করে দেখেন। এতে দুটি যন্ত্রের মধ্যে প্রতি সেকেন্ডে এক কিলোবাইট হারে তথ্য পাঠানো সম্ভব হয়েছে। আর পরীক্ষাকালে যন্ত্র দুটি একবার ঘরের ভেতরে ও একবার ঘরের বাইরে স্থাপন করা হয়। এ সময় যন্ত্র দুটির মধ্যে দূরত্ব ছিল যথাক্রমে দেড় ফুট ও আড়াই ফুট। যে স্থানটিতে এ পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয় সেখানকার সবচেয়ে কাছাকাছি তরঙ্গ সম্প্রচার কেন্দ্রে (একটি টেলিভিশনকেন্দ্র) দূরত্ব ছিল প্রায় সাড়ে ছয় মাইল।
বৈদ্যুতিক সংযোগবিহীন যোগাযোগব্যবস্থা সম্পর্কে শ্যাম গোল্লাকোটা বলেন, চারপাশের বাতাসেই যথেষ্ট তরঙ্গ আছে। এগুলোই শক্তির উৎস হিসেবে ব্যবহার করে যোগাযোগব্যবস্থাকে সক্রিয় রাখা যায়।
ইন্টারনেট অব থিংস ধারণাটির মাধ্যমে এমন একটি যোগাযোগব্যবস্থার কথা বলা হয় যা নিত্যব্যবহার্য সব বস্তু বা জিনিসকেই ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত রাখবে। ফলে যন্ত্রের ওপর মানুষের অব্যাহত নজরদারির প্রয়োজন হবে না। ইনডিপেনডেন্ট
No comments:
Post a Comment